Blogging / ব্লগিং



আমরা হয়তো অনেকেই ব্লগ করি কিন্তু পরোপুরি ধারনা নেই অনেকেরই তাই আসুন আগে জানি ব্লগিং এর সব কিছু। আর নতুন দের জন্য বোনাস যে তারা ব্লগিং শুরুর আগে সব জেনে নিচ্ছেন। সবাইকে একটু ধৈর্য সহকারে পড়তে হবে।
ব্লগ নিয়ে প্রথমে যে বিষয় গুলো আসে তা হলো:
ব্লগ(Blog) বা ব্লগিং(Blogging) কি?
ব্লগ কত প্রকার ও কি কি? 
ব্লগ কিভাবে তৈরী করতে হয়?
ব্লগ কিভাবে পরিচালনা করতে হয়?

আসুন বিস্তারিত জানা যাক....
ব্লগ হলো একটি তথ্য ভিত্তিক বা আলোচনা বিত্তিক সাইট যা ওয়াল্ড ওয়াইড ওয়েব (World Wide Web) এ প্রকাশিত হয়ে থাকে এবং যেটি একটি বিপরীত মূখী টিউন দ্বারা প্রকাশিত হয়ে থাকে, মানে সর্বশেষ প্রকাশিত টিউন গুলো প্রথমে প্রকাশিত হয়। ২০০৯ইং সালের পূর্ব পর্যন্ত ব্লগ গুলো নিজস্ব বা ছোট গ্রুপ দ্বারা পরিচালিত হতো এবং তখন ব্লগ গুলো একটি নির্দিষ্ট বিষয় এর উপর প্রকাশিত হতো। বর্তমানে টুইটার (Twitter), ফেসবুক (facebook )এবং অন্যান্য ক্ষুদ্র ব্লগিং এর মাধ্যম গুলো "multi-author blogs" (MAB) সিস্টেমকে বর্ধিত করনে সাহায্য করছে এবং এর ফলে নিজস্ব প্রকাশিত ব্লগ গুলো সামাজিক সংবাদ মাধ্যম হিসাবে প্রকাশিত হচ্ছে। ব্লগ এর প্রকাশিত টিউন গুলোতে আপনি আপনার মতামত প্রকাশ করতে এবং বিভিন্ন প্রশ্ন করতে পারবেন, এই সুযোগ সুবিধার ফলে ব্লগগুলো সোসাল নেটওয়ার্ক সার্ভিসে পরিণত হচ্ছে। আবার কিছু কিছু ব্লগ মতামত প্রকাশ করার কোন সুযোগ সুবিধা দেয় না। বর্তমান ব্লগ গুলোতে নিজস্ব প্রোফাইল তৈরি এবং তা প্রকাশ করতে দেয় যেমন: টুইটার (Twitter), ফেসবুক (facebook) ইত্যাদি। আবার অনেকে এগুলোতে তাদের কোম্পানি বা কোন পন্য এর জন্য একটি ব্লগ বা ওয়েব সাইট বা পেজ খুলে থাকে, যেন সেটি কে তারা আরো জনপ্রিয় করতে পারে।

* ব্লগ কত প্রকার ও কি কি?

বর্তমানে বিশ্বে অনেক প্রকার ব্লগ আছে। কারন এখন প্রযুক্তির ছোয়ায় প্রতিনিয়ত অসংখ্য বিষয় আমাদের সামনে উঠে আসছে। তাই ব্লগারের সংখ্যাও বাড়ছে। নিম্নে কিছু ব্লগ এবং তার বিষয় ব্স্তু তুলে ধরা হলো।
১. ব্যক্তিগত ব্লগ:
ব্যক্তিগত ব্লগগুলো সাধারণত মতামত ভিত্তিক হয়ে থাকে। এটি যে কেউ  লিখতে পারে।
২. ক্ষুদ্র ব্লগিং (Micro blogging):
ক্ষুদ্র ব্লগিং(Micro blogging) এ সাধারণ প্রযুক্তির নানা বিষয়ে চর্চা  করা হয় যেমন-টেক্স,ছবি,লিংক,ছোট ভিডিও ক্লিপ অথবা অন্যান্য মাধ্যমের বিষয়ের উপর। এখানে সাধারণত মানুষের মনের চিন্তা চেতনা আরো অনেক কিছু নিয়ে আলোচনা করা হয়। বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ,ব্যাবসায়িক মিটিং বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয় সমূহ এবং সেলিব্রেটির বা রাজনৈতিক বিদদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সময়, লেকচার/নতুন বই এর প্রকাশনা/ভ্রমন ইত্যাদি বিষয় এর উপর প্রকাশিত হতে পারে। এটি ফেসবুক, টুইটার এর মতো বড় বড় ওয়েব সাইটেও হতে পারে।

৩. কর্পোরেট এবং অরগানাইজেশনাল ব্লগ (Corporate and organizational blogs):
মার্কেটিং এর জন্য ব্লগিং বর্তমান সময়ে অনেক জটিল একটি বিষয়। যে সব ব্লগ মার্কেটিং,ব্যান্ডিং অথবা ক্রেতা-বিক্রেতা সম্পর্কিত ব্লগ এগুলো কর্পোরেট ব্লগ হিসাবে প্রকাশ পায়। এই রকমভাবে ক্লাব বা সামাজিক ভাবে প্রকাশিত ব্লগ গুলোকে ক্লাব ব্লগ,গ্রুপ ব্লগ ইত্যাদি বলা হয় এবং সেখানে তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য প্রকাশ করে থাকে।
কিছু নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ের উপর প্রকাশিত হয় যেমন- পলেটিক্যাল বা রাজনৈতিক ব্লগ,স্বাস্থ্য সম্পর্কিত ব্লগ,ভ্রমন সম্পর্কিত ব্লগ বা ট্রাভলব্লগ,ফ্যাসন ব্লগ,প্রজেক্ট ব্লগ,শিক্ষা সম্পর্কিত ব্লগ ইত্যাদি। তবে এদের ভিতর মিউজিক ব্লগ এবং আর্ট ব্লক অনেকটা কমন ব্লগ।
৪. মিডিয়া ভিক্তিক ব্লগ:
যখন একটি ব্লগ শুধু মাত্র বিভিন্ন ভিডিও প্রকাশ করে তখন তাকে ভিলগ(vlog) বলে আখ্যায়িত করা হয়। তেমনি বিভিন্ন লিংক সেয়ার করে তাকে লিংকলগ(linklog) বলে। এরকম আরো অনেক ব্লগ আছে যেমন-টেমবললগ(tumblelogs),টাইপক্যাসটিং(typecasting (blogging)) ইত্যাদি।

৫. ডিভাইস সম্পর্কিত ব্লগ:
যে সব ব্লগ মোবাইল ডিভাইস(mobile device),পিডিএ(PDA) সম্পর্কিত হয় তাকে মোব্লগ বলে এবং যে ব্লগ এর মাধ্যমে সরাসরি ভিডিও বা অডিও বা ছবি সেয়ার করে সেই সব ব্লগকে ভিডিও/অডিও/পিকচার ব্লগ বলে।

* কিভাবে ব্লগ তৈরি করতে হয় এবং তৈরি করতে কি কি লাগবে?

যখন কোন ব্লগ তৈরি করতে হয় তখন আগেই নিদির্ষ্ট করে নিতে হয় কি বিষয়ে ব্লগ তৈরি করা হবে এবং তার বর্তমান,ভবিষ্যৎ চিন্তা করতে হবে এবং সেই ব্লগ কিভাবে সবার কাছে গ্রহন যোগ্য হবে? তাই প্রথমে ব্লগ এর বিষয় ঠিক করতে  হবে তারপর ব্লগটি খুলতে হবে।
তাই বিষয় নির্বাচন সম্পর্কে আগে আলোচনা করা হলো-
কোন ব্লগ প্রকাশের পূর্বে অবশ্যই তার বিষয় বস্তু ছাড়া ব্লগ এর নাম দেওয়া যায় না। আর নামের সাথে ব্লগের বিষয় বস্তুর অমিল থাকলে তা কখনোই মানুষের কাছে গ্রহনযোগ্য হয় না। এখন আপনি যদি মোবাইল সম্পর্কিত কোন ব্লগ খোলেন এবং তাতে কম্পিউটার এবং আরো অন্যান বিষয় যোগ করেন তবে তা আপনার ব্লগ এর উপর খারাপ প্রভাব ফেলবে।তাই ব্লগের নামের সাথে বিষয় বস্তুর অবশ্যই মিল থাতে হবে।যেমন আমাদের ব্লগ এর সংক্ষিপ্ত নাম outsourcingtipsbangladesh এখানে outsourcingtipsbangladesh মানে outsourcing tips bangladesh বুঝানো হয়েছে। আমাদের আছে সম্পূর্ণ বাংলায় ব্লগিং টিপস্। আর আমরা এখানে বাংলায় ব্লগিং এর উপর বিভিন্ন টিউন করে থাকি। সুতরাং একটি ব্লগের বিষয় বস্তুই দিতে পারে একটি ব্লগের নাম। যেহেতু বর্তমানে  ব্লগের নিদির্ষ্ট সুন্দর নাম পাওয়া খুবই কঠিন তাই সর্বদা চেষ্টা করবেন ছোট এবং সবার থেকে একটু আলাদা নাম খুজতে। সেটা ফ্রি ডোমেন এ হোক আর কেনা ডোমেন এ হোক।

এখন আসা যাক ব্লগ তৈরি করতে কি লাগে?
একটি ব্লগ তৈরি করতে অবশ্যই একটি ই-মেল অ্যাড্রেস লাগবে। যা দিয়ে আপনি আপনার সখের ব্লগটি খুলতে পাবেন।

এখন আসা যাক কিভাবে ব্লগ তৈরি করতে হয়?
বর্তমান বিশ্বে অনেক ওয়েব সাইট আসে যারা খুলতে সহায়তা করে এবং তাও আবার ফ্রি ডোমেন এ। তবে আপনি টাকা দিয়ে তাদের কাছ থেকে ডোমেনও কিনতে পারেন বা বাহির থেকে ডোমেন কিনে তাদের সাথে যুক্ত করতে পারেন। এই রকম কিছু সাইট হলো: blogger.com, wordpress.com  ইত্যাদি। এই সাইট গুলো অত্যন্ত জনপ্রিয়।
তবে আপনি যদি আমাকে সাজেষ্ট করতে বলেন কোথাই ব্লগ খুলবেন তবে আমি বলবো blogger.com এ  করন এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় সার্চ ইঞ্জিন google.com এর তাই আপনি আনেক সুযোগ সুবিধা পাবেন।তবে wordpress.com কিন্তু blogger.com এর চেয়ে কম নয়। blogger.com, wordpress.com এর উপর বিস্তারিত টিউন সমূহ আপনি আমাদের ওয়েবসাইট এ পাবেন। কারো যদি কোন মতামত থাকে তবে তা প্রকাশ করতে পারেন।

* ব্লগার ড্যাসবোর্ড কি? কিভাবে তা পরিচালনা করতে হয়?

একটি ব্লগ পরিচালনার জন্য ব্লগার (blogger.com) যে ড্যাসবোর্ড ব্যবহার করে থাকে তাকে ব্লগার ড্যাসবোর্ড বলে। তেমনি wordpress.com ইত্যাদি সাইটেরও ড্যাস বোর্ড আছে। আরো বিস্তারিত জানতে হলে আপনাকে প্রথমে blogger.com একটি একাউন্ট খুলতে হবে।
এখন আসা যাক কিভাবে তা পরিচালনা করতে হয়?
আপনার যদি একটা ফেসবুক প্রফাইল থাবক তবে বিষয় টি বুঝতে তেমন কঠিন লাগবে না আর না থাকলেও সমস্যা নাই।
এখন আপনার blogger.com একাউন্ট এ লগইন করেন তাহলে নিচের ছবির মতো দেখতে পাবেন


এখানে New Blog এ ক্লিক করে একটি নতুন ব্লগ তৈরি করুন। এইবার নিচের মতো একটি উইনডো আসবে যেখানে আপনার ব্লগের টাইটেল এবং এড্রেস টি লিখে ফেলুন।এখন Create blog  এ ক্লিক করুন।


এখন আপনার তৈরি ব্লগটিতে ক্লিক করে ভেতরে ব্লগ ড্যাসবোর্ড এর ভিতরে প্রবেশ করুন এবং নিচের ছবিটি খেয়াল করুন।
ছবির মতো ভিজিটর গ্রাফটি তে কোন ভিজিটর দেখাবে না তাছাড়া সব ঠিক থাবে। সুতরাং তৈরি হয়ে গেল আপনার ব্লগিং ড্যাসবোর্ড এখন আপনাকে যা করতে হবে তা হলো ব্লগ এর বর্ণনা দিতে হবে তার জন্য আপনাকে সেটিং আপসন এ ক্লিক করতে হবে এবং Description এর Edit এ ক্লিক করে আপনার ব্লগ এর বর্ণনাটি লিখে ফেলুন।নিচের ছবিটি খেয়াল করুন।
এখনও আপনার ব্লগটি প্রকাশিত হয়নি যতক্ষন না আপনি একটি টিউন না লিখে তা প্রকাশ করছেন। এখন পালা একটি নতুন টিউন লেখার। New Post এ ক্লিক করুন দেখবেন একটি ফাকা পেজ আসবে নিচে লক্ষ করুন।


এখন ছবিকে দেখতে পাচ্ছেন যে আমি ১,২,৩,৪,৫ দিয়েছি এর মানে

১.এখানে আপনার টিউনটির হেডলাইন লিখুন

২.টিউন এর বর্ণনা লিখুন

৩.লেভেল এ ক্লিক করে আপনার টিউনটি কিসের উপর মানে ক্যাটাগরি যেমন আমরা দিয়েছি blogging,bangla blogging ইত্যাদি।

৪.এখানে ক্লিক করে আপনার ব্লগকে প্রকাশিত করুন

এখান View Blog  এ ক্লিক করলে আপনার ব্লগটি দেখতে পারবেন।
মূল বিষয় গুলো তুলে ধরা হলো, নিজে চেষ্টা করলে ধীরে ধীরে আরো অনেক কিছু জানতে পারবেন।
এখন আসা যাক ব্লগিং ড্যাস বোর্ড এর অন্যান্য বিষয়ে। নিচের ছবির নম্বর গুলো ভালো করে খেয়াল করুন।

. Overview এখানে পুরো ব্লগ এর সারাংশ বুঝায়।

২. এখানে ক্লিক করে আপনার বিভিন্ন টিউন দেখতে এবং তা সংশোধন করতে পারবেন।

৩. আপনি এই অপশনের মাধ্যমে আপনার বিভিন্ন টিউন কে আলাদা পেজ এ লিংক করে দিতে পারেন যেমন আমাদের সাইট এ ব্লগিং,মুক্তপেশা,সাইট ম্যাপ ইত্যাদি পেজ আছে।

৪. আপনার টিউন এ কে কে মতামত প্রকাশ করলো আপনি তা দেখতে এবং উত্তর দিতে পারবেন আর যদি করো মতামত পছন্দ না হয় তা মুছে ফেলতে পারবেন।আপনি ইচ্ছে করলে মতামত অপসনটি মুছে ফেলতে পারেন।

৫. এটি আপনার ব্লটিকে google +এর সাথে সংযুক্ত করবে এবং আপনার টিউন গুলোকে শেয়ার করবে। আপনি চাইলে এটা বন্ধ করতে পারবেন।
৬. এই অপসনের মাধ্যমে আপনি আপনার ব্লগ এর মোট ভিজিটর দেখতে পারবেন।দৈনিক ভিজিটর, কোথা থেকে তারা আসছে এবং কোন দেশ থেকে কত জন আসছে সব কিছু দেখতে পারবেন। আর একটি বিষয় আপনি যখন আপনার ব্লগ টি ভিজিট করেন তখন কিন্তু এটি আপনাকে নিয়ে মোট ভিজিটর হিসাব করে এখান থেকে আপনি আপনার ট্রাকিং অফ করতে পারবেন।
৭. এটি হল অাপনার উপার্জন। বিস্তারিত... 
৮. লেআউট হলো বাড়ির জানালা দরজার মতো, মানে আপনার ব্লগে কোথায় কি সেট করবেন যেমন- Popular Post, Recent Post,Online Visitor Blog ইত্যাদি 
৯.টেমপ্লেট হলো ব্লগ এর বাহিরের সুন্দর্য আপনার বাড়ি যদি দেখতে সুন্দর হয় তবে মানুষ কি করবে? তাকিয়ে থাকবে? তাইতো ঠিক। তেমনি আপনার ব্লগ এর সুন্দর্য ভিজিটর কে আরো আকৃষ্ট করবে। এখান থেকে আপনি অনেক ডিফল্ট টেমপ্লেট পাবেন যা সেট করতে পারেন আপনার ব্লগে অথবা বাহিরের টেমপ্লেট ও সেট করতে পারেন।
কিভাবে কাজ শুরু করবেন? অামাদের নিচের টিউন টি দেখুন..

How to start a blog?

যদি কোন প্রশ্ন বা মতামত থাকে তবে তা করতে পারেন। সবাই ভালো থাকবেন।  আল্লা হাফেজ।

No comments:

Post a Comment